যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে, তারাই দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে কুমিল্লার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ বিষয়ে বিএনপি’র মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি একথা বলেন।
‘সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে কারা রাজনীতি করে’ প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে নিয়ে যারা রাজনীতি করে, যারা দেশটাকে তালেবানি রাষ্ট্র বানাতে চায়, কথায় কথায় এই দেশকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র করতে চায়, তারা তো বিএনপি জোটের মধ্যে আছে। বিএনপি’র মধ্যে অনেক নেতা আছে যারা এই দেশটাই চায়নি। যারা এই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে তারাই কুমিল্লার ঘটনা ঘটিয়েছে।’
‘কুমিল্লার ঘটনা নিশ্চয়ই বের হবে, দিবালোকের মতো স্পষ্ট হবে এবং কি উদ্দেশ্যে এটি ভিডিও করে আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা-স্থিতি আছে, দেশ করোনা মহামারির মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে, মহামারিও নিয়ন্ত্রণে আসছে, সুতরাং তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে মানুষের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেনি। সে কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার স্বার্থে বিএনপি-জামাত এবং তাদের দোসর সাম্প্রদায়িক উগ্রগোষ্ঠী মিলেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’
এর আগে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি ফুড পলিসি ইন্টারনেশনাল ইনস্টিটিউট প্রকাশিত বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ২০১৯ সালের তুলনায় ১৩ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৭৫তম, যেখানে ভারতের অবস্থান ৯৮তম, পাকিস্তানের অবস্থান ৮৮তম। আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯২তম এবং সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশে মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন। এ সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে এবং কৃষি এবং কৃষকবান্ধব নানা কর্মসূচি এবং নীতির কারণে আমরা সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় এবং চতুর্থের মধ্যে উঠানামা করে এবং আলু উৎপাদনে ৭ম। এটি বিশ্ব খাদ্য সংস্থার কাছেও বিস্ময় যা প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই সম্ভবপর হয়েছে। আমরা এক বিলিয়ন ডলারের বেশি কৃষিপণ্য রপ্তানি করছি। এটিকে দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা এবং ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগোচ্ছে।’
একইসঙ্গে আইনের শাসক সূচকেও বাংলাদেশ একধাপ এগিয়েছে, বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘সমালোচনার মাধ্যমে কাজ শাণিত হয় কাজ শুদ্ধ হয়, সেটি আমরা চাই। কিন্তু যারা প্রতিদিন টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন তারা সরকারের নেতৃত্বে এই অর্জনের পর তারা কি অভিনন্দন সরকারকে জানাবেন, এটি আমার প্রশ্ন। আইনের শাসন নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদের প্রশ্নের মধ্যেই আইনের শাসন সূচকে আমরা একধাপ এগিয়েছি, এখন তারা কি বলবেন, সেটি আমার প্রশ্ন।’
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসব অগ্রগতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে দেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তর করার ক্ষেত্রে একটি বিরাট মাইলফলক এবং এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন, একইসঙ্গে দেশের সব মানুষকে অভিনন্দন, সাংবাদিকবৃন্দকেও অভিনন্দন, বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।