ঐক্য-হেদায়েত আর নবিওয়ালা জিন্দেগির প্রার্থনা

0
449
ঐক্য-হেদায়েত আর নবিওয়ালা জিন্দেগির প্রার্থনা

লাখো মানুষের অংশগ্রহণে টঙ্গীর তুরাগতীরে আখেরি মোনাজাতে ক্রন্দনরত মুসল্লিদের ‘আমিন’, ‘আমিন’ ধ্বনির মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। বিশ্ব শান্তি, সারা দুনিয়ার মুসলিমদের পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব, পরিপূর্ণ হেদায়েত, আল্লাহর সব হুকুম মানা আর নবী করীমের (সা.) দেখানো পথে জীবন গড়ার জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মোনাজাতে আল্লাহর কাছে নিজেদের অন্তরের খাহেশাত মুক্ত, রাগকে বশ, নাফরমানিকে ঘৃণা, ভালোবাসা ছড়িয়ে বিশ্ব মুসলিম ভাতৃত্ব গড়া ও দ্বীনের জন্য নিজেদের কবুল করার বিশেষ আর্জি জানানো হয়।

রোববার (২২ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে তুরাগতীরে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। এর আগে বাদ ফজর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা মুরসালিন। আর হেদায়তি বয়ান করেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। তাদের বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা জিয়া বিন কাসিম।

আখেরি মোনাজাতে ঈমানি জিন্দেগী, ঈমানি মৃত্যু, উত্তম আখলাক, ঈমানি হাকিকত বুঝার তৌফিক, অন্তরে আল্লাহর ভয় ও মহব্বত সৃষ্টি, সারা জীবনের গোনাহ মুক্তি, উত্তম রিজিক, দুনিয়া ও আখিরাতের কামিয়াবি, পৃথিবীর মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, ঈমানি ভ্রাতৃত্ব মজবুত করা ও সারা বিশ্বের সকল মানুষের জন্য আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ চাওয়া হয়।

মোনাজাতে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী প্রথমে সুরা আলে ইমরান থেকে তেলাওয়াত করেন। দয়াময় আল্লাহর নামে হামদ পাঠ করেন। মোনাজাতে তিনি সারা দুনিয়ার মুসলমানদের জান-মাল আর সময়কে আল্লাহর জন্য কবুল, জাহান্নামের ভয়ানক আগুন আর পুলসিরাতের কঠিন পথ মুক্তি এবং মুসলিমদের হকের ওপর অটুট রাখা এবং বাতিল শক্তিকে পরাজিত করার আর্জি জানান।

কবরবাসী সকল মুমিন নারী-পুরুষকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান, দ্বীনের জন্য যারা মেহনত করছেন তাদের জান-মাল আর সময় কবুল করে তাদের সম্মান বৃদ্ধি, সাহাবিদের মতো ঈমান, ঈমানি শক্তি, ধৈর্য, প্রজ্ঞা আর সম্প্রতির দোয়া করেন তিনি।

দুনিয়ার সমস্ত কাজকর্ম ঈমানের সঙ্গে করার, রাগকে খতম, নাফরমানিকে শেষ করে দিয়ে ঈমানের প্রতি আগ্রহ পয়দা করার বিশেষ আর্জি করা হয় মোনাজাতে। ধ্যানের সাথে নামাজ কায়েম, নামাজের মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান আর অন্তরকে স্রেফ আল্লাহর দিকে মুতাওয়াজ্জা করার তাওফিক চাওয়া হয়।

বিশ্ব মুসলমানদের জানমালের হেফাজত, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ, ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেকে ঈমানদার মুসলমানদের রক্ষা, বাতিল শক্তির সমস্ত চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রকে উৎখাত করার মালিক আল্লাহ। হকের রাজ প্রতিষ্ঠা ও বাতিল শক্তিকে চিরতরে নস্যাৎ করে দিতে আল্লাহর কাছে বিশেষ সাহায্য কামনা করা হয়। মোনাজাতে বিশ্ব শান্তি ও কল্যাণের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধির জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা হয়।

এদিকে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ধর্মপ্রাণ মানুষজন ইজতেমায় মাঠে উদ্দেশে রওনা হন। লাখো মানুষে মুখরিত তুরাগতীরে অনেকে পৌঁছাতে না পেরে রাস্তাতেই অনেকে আনেকে মোনাজাতে অংশ নেন। অনেকেই আবার খোলা মাঠে, যানবাহনে, বহুতল ভবন ও বাসার ছাদে থেকে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। কষ্ট হলেও তাদের মুখে ছিল প্রশান্তির ছাপ।