বিরোধীদের গ্রেফতার না করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা

0
627
বিরোধীদের গ্রেফতার না করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা
নিজস্ব প্রতিবেদক : আন্দোলন করা বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৪ আগস্ট) গণভবনে আওয়ামী লীগের ৮ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আটজন সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠকের আগে এমন নির্দেশনা দেন তিনি। আন্দোলন এবং নৈরাজ্যের কারণে মানুষের কষ্ট আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের অপজিশন একটা সুযোগ পাচ্ছে। তারা আন্দোলন করছে, করুক। আজকে আমি নির্দেশ দিয়েছি, তারা আন্দোলন করছে, করুক, তাদের কাউকে যেন গ্রেফতার বা ডিস্টার্ব করা না হয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর অফিসও ঘেরাও দেবে, আমি বলেছি হ্যাঁ আসতে দেব। কেননা আমরা যে আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি দেশের কাজ করতে দেশের মানুষতো সেটা জানে।
মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে দেশের মানুষের সমস‌্যা উপলব্ধি করে তাদের কষ্ট লাঘবে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি। মানুষের কষ্ট যে আমরা বুঝি না তা নয়। তবে তারা যদি এটা বেশি করতে যায় এর প্রভাবে তো মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে। এটা দেশের জন্য ক্ষতি হবে। তবে এটা আমরা সামাল দিতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে দেশেও সমন্বয় করা হবে। দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন শুরু হলে বিদ্যুতের এই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। সরকারপ্রধান বলেন, যখনই বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমবে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাডজাস্ট করব, সেটাও আমার নির্দেশ রয়ে গেছে।
বর্তমান সংকট কাটাতে সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, হয়তো আর কিছুদিন আমাদের কষ্ট করতে হবে। আমাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন শুরু হলে বিদ্যুতের এই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা যেতে না যেতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে স্যাংশন এবং পাল্টা স্যাংশন জনজীবনে সর্বনাশ ডেকে আনছে, যার ভুক্তভোগী হচ্ছে সারা বিশ্বের সাধারণ জনগণ।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমেরিকা স্যাংশন দিলো রাশিয়াকে শায়েস্তা করার জন্য, কি দেখা যাচ্ছে যে শায়েস্তা হচ্ছে সাধারণ মানুষ। শুধু আমাদের দেশ বলে নয়, ইউরোপের দেশগুলো এমনকি আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া-প্রত্যেকটি মহাদেশের মানুষেরই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সব জিনিসের ওপরই এর একটা প্রভাব পড়েছে। ‘আর আমাদের কিছু লোকতো থাকেই অপ্রয়োজনেও জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেয় ওই ছুতা ধরে, সেটাই হচ্ছে কিছু কিছু। না হলে এত দামতো বাড়ার কথা নয়।-বলেন শেখ হাসিনা।
সরকার জনগণের কাছে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতির সফল বাস্তবায়ন ঘটিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যদি এই করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং স্যাংশন ও পাল্টা স্যাংশন না হতো তাহলে আমাদের দেশ কখনই সমস্যায় পড়ত না। আমরা এগিয়ে যেতে পারতাম। কেননা যে ক্ষেত্রগুলো আমাদের আমদানিনির্ভর সেখানেই সমস্যাটা দেখা দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, স্যাংশন দিয়ে লাভটা কি হলো। বাস্তবিক যদি লাভ কারও হয় তাহলে সেটা আমেরিকা এবং রাশিয়ারই হয়েছে। বিশ্ববাজারে ডলার এবং রুবলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে ঢেলে সাজাতে চায় আওয়ামী লীগ। তবে করোনাসহ নানা কারণে দলটির তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দলের প্রধান শেখ হাসিনার বৈঠক করা সম্ভব হয়নি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সিরিজ বৈঠকে বসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এরই অংশ হিসেবে আজ ৮ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আটজন সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
গণভবনে বৈঠকে উপস্থিত আছেন ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সিলেট বিভাগে শাখাওয়াত হোসেন শফিক, রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, রাজশাহী বিভাগে এসএম কামাল হোসেন, খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এবং বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক আফজাল হোসেন।