সীতাকুন্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে। ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় সীতাকুন্ড থানায় ৮ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম আজ বুধবার কনটেইনার ডিপোর সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আগুন নিভে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সীতাকুন্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, তাঁর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ সিদ্দিকী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ডিপো কর্তৃপক্ষের ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম বাসস’কে জানান, ডিপোর ভেতরে কনটেইনারের আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে। তবে কিছু কনটেইনার থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এগুলোতে গার্মেন্টস পণ্য রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানিতে ভিজে থাকার কারণে এগুলো থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা পুরো ডিপো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। ক্রেনের সাহায্যে এসব কন্টেইনার সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর কারিগরি একটি টিম ফায়ার সার্ভিস ও ডিপো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। আগুন লাগার বড় কারণ ছিল এখানে কিছু রাসায়নিকের কনটেইনার ছিল। রাসায়নিক থাকা কনটেইনারগুলো আমরা শনাক্ত করার চেষ্টা করেছি এবং সেগুলোকে পৃথক করে ফেলেছি। আগুনের পাশে অক্ষত থাকা কনটেইনারগুলো আমরা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ আরো জানান, ডিপো কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও ধারণা দিয়েছে প্রায় ৩০টি কনটেইনারে রাসায়নিক আছে। তারা জানিয়েছে, ডিপোতে চার হাজার ৪০০ কনটেইনার ছিল। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে বলতে পারি, ৪০০ কনটেইনার ধ্বংস হয়েছে। উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত সোয়া ৯ টায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে প্রথমে আগুন লাগে। এর দেড় ঘণ্টা পর ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। রাত ১১টার দিকে আগুন বিভিন্ন কনটেইনারে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে আগ্রাবাদ, ফেনী, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন ফায়ার স্টেশনের ২৫ টি টিম একযোগে আগুন নির্বাপনের চেষ্টা করে। টানা ৭২ ঘণ্টা পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন ও বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৯ কর্মীসহ ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।
এদিকে, বিএম ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সীতাকু- থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ সিদ্দিকী বাদী হয়ে ডিপো পরিচালনায় যুক্ত ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।
আসমিরা হলেন- বিএম কন্টেইনার ডিপো লিমিটেডের জিএম নাজমুল আক্তার খান, ডিজিএম নুরুল আক্তার, ম্যানেজার এডমিন খালেদুর রহমান, সহকারী এডমিন অফিসার আব্বাস উল্লাহ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল আজিজ, কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশন ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ও কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশন নজরুল ইসলাম। মালিক পক্ষের কাউকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি।
সীতাকু- থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, মামলার পর তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। – (চট্টগ্রাম, ৮ জুন, ২০২২, বাসস) :