মালদ্বীপে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদের উদ্যোগে দূতাবাসের হল রুমে মালদ্বীপ প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
এ সভায় মালদ্বীপের সব শ্রেণীর প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। ব্যবসায়ীরা মালদ্বীপ বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দূর করতে দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ সরকারের সহযোগিতা চান।
আলোচনায় উঠে এসেছে- মালদ্বীপে ব্যাবসা করতে হলে মালদিভিয়ান ব্যক্তির নামের কাগজপত্র রেজিস্ট্রেশন ও ব্যবসায়িক লাইসেন্স করতে হয়। এজন্য অনেক বাংলাদেশি ব্যবসা করতে পারে না এবং ব্যবসা শুরু করলেও মালদিভিয়ান অনেক লোক এই প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে প্রতারণা করে, ব্যবসা যখন লাভবান দেখে তখন তারা তাদের কাগজপত্র সহ লাইসেন্স বাতিল করে দিয়ে ওই প্রবাসীদের সর্বস্বান্ত করে দেয়, এ সমস্যা সমাধানের জন্য দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ও মালদ্বীপ সরকারপ্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ব্যবসায়ীরা মালদ্বীপ বাংলাদেশের একটি বৃহৎ বাণিজ্যের অংশীদার উল্লেখ করে জানান, এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে এখানকার জনগণের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, সঙ্গে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতি মালদ্বীপের মানুষের কদর বাড়ছে। তারা মালদ্বীপের সঙ্গে বাণিজ্যবৈষম্য কমিয়ে আনতে বিভিন্ন প্রস্তাব ও পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম আজাদ ব্যাবসায়ীদের পরামর্শ ও মতামতগুলো মনোযোগসহকারে শুনেছেন। তিনি বলেন, মালদ্বীপে বসবাসরত বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সার্বক্ষণিক দূতাবাসের সেবা কার্যক্রম চালু আছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ-মালদ্বীপের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। দু-দেশের অসাধারণ কূটনৈতিক দক্ষতার ফলশ্রুতিতে দিগন্তের উম্মেষের কারনেই মালদ্বীপে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ, পণ্য পরিবহণে উভয় দেশের মধ্যে সরাসরি শিপিং লাইন চালু, আকাশপথে পণ্য পরিবহণে পরিবহণ ব্যয় হ্রাসকরণসহ দেশটিতে অবৈধদের বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়ার বিষয়ে মালদ্বীপ সরকারের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
উক্ত সভায় প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সিআইপি ও গ্লোবাল রিচের চেয়ারম্যান সোহেল রানা, বিশিষ্ট শিক্ষা অনুরাগী ও মিয়াঞ্জ ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার আহমেদ মোত্তাকি, ভিউ কন্সট্রাকশন এর চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন, ঢাকা ট্রেডার্সের চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন, ফোর এল ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান হাদিউল ইসলাম, ফুড এন্ড ফুডের চেয়ারম্যান নুরে আলম রিন্টু, পি-টি মার্টের পরিচালক জহিরুল ইসলাম, ব্যাবসায়ী মজিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. সোহেল পারভেজ, তৃতীয় সচিব মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
অবশেষে, উভয় দেশের মধ্যকার বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য একযোগে কাজ করার একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং প্রবাসে ব্যবসায়ীদের সুসংগঠিত থেকে বৈধ পথে আরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহ দেওয়ারও আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
পরিশেষে, মালদ্বীপের প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যাবসায়ীরা রাষ্ট্রদূত সাহেবকে ধন্যবাদ জানান এমন একটি উদ্যোগ নিয়ে সব প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যাবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করার জন্য। ব্যাবসায়ীরা বলেন, এর আগে অনেক রাষ্ট্রদূত এসেছেন কেউ আমাদের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেননি, আমাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো জানার চেষ্টা করেননি।