ময়মনসিংহে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষায় তিন প্রতারক গ্রেফতার হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সোমবার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যেছমিউল আলম নামে একজন অতিরিক্ত সচিব ও ডিআইজি পরিচয়ে তিনজনকে পুলিশ সদস্য পদে চাকুরী দিতে পুলিশ সুপারের কাছে মোবাইলে সুপারিশ করেন।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার ময়মনসিংহে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই নিয়োগ পরীক্ষা স্বচ্ছ পক্রিয়ায় সম্পন্ন করতে পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান আগে থেকেই কড়া নির্দেশনা দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি পুলিশ আগেই গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। গোয়েন্দা নজরদারির ফলে তিন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, জামালপুরের মেলান্দহ এলাকার রজলুর রহমানের ছেলে ছামিউল আলম সোমবার পুলিশ সুপারের সরকারী মোবাইল নম্বরে কল করে। তিনি ফোনে কথোপকথন কালে পুলিশ সুপারের কাছে নিজেকে সরকারের অতিরিক্ত সচিব বলে পরিচয় দিয়ে তার পছন্দের ৩ জন প্রার্থীকে পুলিশ কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকুরী দেয়ার সুপারিশ করেন। এতে পুলিশ সুপারের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রতারক মোঃ ছামিউল আলমকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ফোন করার কাজে ব্যবহৃত সীমসহ মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে পুলিশ। ছামিউল আলম পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় সে একসময় পুলিশ বিভাগের অনিয়মিত খুচরা মোটর পার্টস সরবরাহকারী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
অপর অভিযানে ফুলপুরের জালাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অনলাইনে আবেদনকারীদেরকে চাকুরী পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে ঐ এলাকার রফিকুল ইসলাম ও আঃ কাদিরকে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরী পাইয়ে দিতে ৫০ হাজার করে আগাম টাকা হাতিয়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তার নিজ বাড়ি থেকে জালাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। জালাল উদ্দিন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায় কামরুল হাসান এক ব্যাক্তি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে টাকার বিনিময়ে চাকুরী নিয়ে দিতে পারবে এমন আশ্বাসে তিনি ৫জন প্রার্থী সংগ্রহ করেন।
পুলিশ আরো জানায়, এর আগে কামরুল এ সব প্রার্থীদেরকে ঢাকার উত্তরায় নিয়ে ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করে। ঐ কামরুল মোবাইল ফোনে প্রার্থীদের সাথে নিজেকে ডিআইজি পরিচয়ে কথা বলে। অপর অভিযানে মুক্তাগাছার মোঃ মারুফ মিয়া নামে আরো এক প্রতারককে গ্রেফতার করে। ডিবি পুলিশ জানায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর অনলাইনে আবেদন লপা বাতিল হয়।
পরে সে ভূয়া প্রবেশপত্র তৈরী করে নিয়োগ বোর্ডে গেলে তার প্রবেশপত্র ভূয়া হিসাবে ধরা পরলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ভূয়া প্রবেশপত্র তৈরীকারী হামিদুল ইসলামের ব্যবহৃত কম্পিউটারটি জব্দ করা হয়। ডিবির ওসি আরো জানান, এ সব প্রতারকচক্রের নামে পৃথক মামলা হয়েছে। প্রতারকচক্রের অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মঙ্গলবার তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।