হেমন্তের শেষে শীতের আগমনের সাথে সাথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রাজারহাটের গাছিরা। রাজারহাট উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে শীতের তীব্রতা দেখা না দিলেও এরই মধ্যে অনেক গাছি অভাবের কারণে খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
এই শীতকাল গ্রামীণ মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামীণ জীবনে শীত আসে বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলের গাছিদের কাছে সে তো বিভিন্ন মাত্রায় রূপ নিয়ে। নানা স্বপ্ন আর প্রত্যাশায় তাদের অনেকটা সময় কেটে যায় এই খেজুর গাছের সাথে। বলতে গেলে সারাদিন এক গাছ থেকে অন্য গাছ এভাবেই কেটে যায় তাদের দিন।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার গাছি আমিনুর রহমান বলেন, খেজুর গাছ প্রায় ছয়/সাত বছর বয়স থেকে রস দেওয়া শুরু করে পঁচিশ থেকে ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত রস দেয়। তবে গাছ যতই পুরনো হয় রস দেয়া ততই কমে যায়। পুরনো গাছ রস কম দিলেও পুরনো গাছের রসগুলো খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়। মাঝ বয়সের গাছ থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ রস পাওয়া যায়। বেশি রস সংগ্রহ করা গাছের জন্য অবার অনেক ক্ষতিকর। রস সংগ্রহের জন্য কার্তিক মাসে খেজুর গাছ পরিষ্কারের কাজ শুরু করা হয়।
তিনি আরো বলেন, অগ্রহায়ন মাস থেকেই রস পাওয়া যায়। রসের ধারা চলতে থাকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। শীতের সঙ্গে রস ঝরার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। শীত যত বেশি পড়বে তত বেশি রস ঝরবে। রসের স্বাদও ততই মিষ্টি হবে। অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ মাস হলো রসের ভরা মৌসুম। অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত স্থান ভেদে একটি খেজুর গাছে মাসে ৪০-৫০ কেজি রস পাওয়া যায়।