জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কাছ থেকে বকেয়া অর্থ আদায় করতে পারছে না বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন কোম্পানি পদ্মা অয়েল। বকেয়ার বিষয়ে এ দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিভিন্ন সময় আলোচনা করেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। নিয়মিত বিরতিতে চিঠি চালাচালিও চলছে। তারপরও দেনা পরিশোধ করছে না বিমান।
দেশে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী উড়োজাহাজগুলো সাধারণত ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাকা পদ্মা অয়েলের ডিপো থেকে জ্বালানি তেল জেট ফুয়েল নেয়। দৈনিক ৫০ থেকে ৬০টি এয়ারলাইনস কোম্পানির উড়োজাহাজ জেট ফুয়েল নেয় এ ডিপো থেকে। বিমান বাদে অন্য সব উড়োজাহাজ অগ্রিম টাকা পরিশোধ করে তেল নেয়। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিসেবে বিমানকে এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে পদ্মা অয়েল কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপক (অ্যাভিয়েশন) মো. মাহবুবুল আলম বলেন, অন্য পরিচালন ব্যয় মিটিয়ে জ্বালানি তেল কেনা বাবদ অর্থ পরিশোধে টাকা থাকে না বলে জানিয়েছে বিমান। দীর্ঘদিন ধরে এ বকেয়া জমে তা বড় আকার ধারণ করেছে।
বিপিসির এক কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সভায় বকেয়া টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করে বিমানের প্রতিনিধিরা। মূলত ২০১১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বিল পরিশোধ করেনি বললেই চলে। পদ্মা অয়েল এবং বিপিসি তাদের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করেছে। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় মন্ত্রণালয় পর্যায়ে বৈঠক হয়। পরে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পুঞ্জীভূত বকেয়া ধাপে ধাপে পরিশোধ করা এবং ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে নিয়মিত বিল পরিশোধের জন্য বিমানকে বলা হয়।
বিপিসির চেয়ারম্যান জানান, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বকেয়া পরিশোধের কথা বিমানের। কিন্তু তারা মাত্র ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করে একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিষয়টি গতিশীল করা প্রয়োজন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেডের এক কর্মকর্তা বলেন, বিমানের আর্থিক সংকট এক সময় বেশ প্রকট ছিল। তখন বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। এখন নিয়মিত অর্থ পরিশোধের পাশাপাশি আগের বকেয়াও পরিশোধ করা শুরু হয়েছে। তবে বিপিসির এক কর্মকর্তা বলেন, কয়েক বছর মুনাফা গুনলেও ফুয়েলের টাকা শোধ করেনি বিমান।